ল লাইফ রিপোর্ট: আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস থেকে ৫ লাখ ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়েছেন,এমন ২৮০ ব্যক্তিকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে হাজির হতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
অবসায়ন প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা পিপলস লিজিং-এর সাময়িক অবাসায়ক (প্রবেশনাল লিক্যুডেটর) মো. আসাদুজ্জামান খানের দেওয়া এ সংক্রান্ত তালিকা দেখে আদালত এ আদেশ দেন।
আদালতে অবাসায়ক (প্রবেশনাল লিক্যুডেটর) মো. আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মেজবাহুর রহমান। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন কাজী এরশাদুল আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল ওয়াহাব।
আইনজীবী মেজবাহুর রহমান বলে,২৮০ জনকে তলবের পাশাপাশি এই ২৮০ জনকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। সশরীরে হাজির হয়ে ঋণ খেলাপির বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন আদালত।
১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পিপলস লিজিংকে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে মেয়াদি আমানত ও বিভিন্ন ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা ধার করে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রতিষ্ঠানটির আমানত ছিল ২ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। আর ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা, এর মধ্যে খেলাপিই ৭৪৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ খেলাপি ঋণের হার ৬৬ শতাংশ।
২০১৫ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে লোকসান গুনে প্রতিষ্ঠানটি। খেলাপি প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা আদায় করতে না পারায় আমানতকারীদের টাকাও ফেরত দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি।
২০১৯ সালের ১৪ জুলাই পিপলস লিজিং অবসায়নের জন্য আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওইদিনই মামলার শুনানি শেষে প্রতিষ্ঠানটি অবসায়নে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন আদালত।
এছাড়া অবসায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক পদমর্যাদার একজনকে অবসায়ক নিয়োগ দিতে বলা হয়।
পরে সাময়িক অবসায়ক (প্রবেশনাল লিকুইডেটর) হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান খানকে নিয়োগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এরপর আদালত পিপলস লিজিংয়ের ঋণ গ্রহীতাদের একটা তালিকা চায় সাময়িক অবাসায়ক (প্রবেশনাল লিক্যুডেটর) মো. আসাদুজ্জামান খানের কাছে।
আইনজীবী মেজবাহুর রহমান বলেন, নির্দেশ অনুযায়ী গত বছর ২৩ নভেম্বর প্রায় পাঁচশ জন ঋণ গ্রহীতার একটি তালিকা দাখিল করা হয়। সে তালিকা দেখেই দেখার পর আদালত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যারা পাঁচ লাখ বা তার বেশি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়েছেন তাদের তিনি কারণ দর্শাতে নোটিস করেছেন এবং তাদের সবাইকে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন।