ল লাইফ রিপোর্ট:নামের মিলে কারাগারে থাকা মানিক হাওলাদারকে জামিনে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এই মামলার প্রকৃত আসামি মো. মানিক মিয়াকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৮ জুন) বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এছাড়া এই মামলার দুই তদন্ত কর্মকর্তার জবাববন্দি নিতে শরিয়তপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে বলা হয়েছে। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ঢাকা পোস্টকে আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে মাদক মামলায় এক মানিকের স্থলে অন্য মানিক জেল খাটছেন- এমন অভিযোগে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, মাদক মামলায় গ্রেফতার মানিক আর পরোয়ানায় থাকা মানিক এক ব্যক্তি নয়।
এর আগে গত ৭ মার্চ মাদক মামলায় এক মানিকের স্থলে অন্য মানিক জেল খাটছেন- এমন অভিযোগে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। শরিয়তপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে তদন্ত করে রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এছাড়াও মানিকের আটকাদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তাও জানতে চেয়ে রুল দেন হাইকোর্ট।
আদালত আদেশে শরিয়তপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে প্রকৃত অপরাধী মানিক মিয়াকে চিহ্নিত করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে সিরাজগঞ্জের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল ও জেল সুপারকে সব তথ্য হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন আদালত।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী পার্থ সারথী রায়। ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
এর আগে মাদক মামলায় এক মানিকের স্থলে অন্য মানিক জেল খাটছেন-এমন অভিযোগ এনে ‘নির্দোষ’ মানিককে মুক্তি দিতে রিট করা হয়।
আইনজীবীরা জানান, ২০০৯ সালে একটি গাড়িতে ৬৬৮ বোতল ফেনসিডিল পাওয়ার অভিযোগে ওই বছরের ২ জুন সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানায় চারজনের বিরুদ্ধে করা মামলা হয়।
পরে ওই মামলার আসামি মো. মানিক মিয়াকে ২০০৯ সালের ৩ জুন গ্রেফতার করে পুলিশ। কিছুদিন কারাভোগের পর একই বছর হাইকোর্ট থেকে জামিন পান মানিক।
মামলার বিচার শেষে ২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জ আদালতে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে চার আসামিকে চার বছরের কারাদণ্ড দেন।
আসামিরা হলেন, ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার মন্টু শেখ ওরফে জামাল উদ্দিন ও সোহরাব হোসেন, পটুয়াখালী বাউফল থানার মো. জামাল হোসেন ও শরীয়তপুর জেলার সখিপুর থানার মো. মানিক মিয়া।
মানিক হাওলাদারের ছোট ভাই রতন হাওলাদার বলেন, আমাদের বাড়ি হচ্ছে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আলম চাঁন ব্যাপারী কান্দী গ্রামে। আমার বাবার নাম নজরুল ইসলাম আর মায়ের নাম রেজিয়া বেগম।
অন্যদিকে মামলার যে প্রকৃত আসামি মো. মানিক মিয়া তার বাবার নাম ইব্রাহিম মৃধা, মায়ের নাম লুতফা বেগম। গ্রাম মালতকান্দি। সখিপুরের ৬ নম্বর ওয়ার্ড। চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি সাজাপ্রাপ্ত মো. মানিক মিয়ার স্থলে শুধু নামের মিল থাকার কারণে মানিক হাওলাদারকে শরীয়তপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এম/এ/হ