অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান ||
প্রায়ই ভাবতাম আম্মু কেন গৃহিণী!! সেই যুগে মাস্টার্স পাশ করে, আইন বিষয়ে পড়াশোনা করে কেন নিজের মেধা আর সময়ের অপচয়!! সত্যকারের উপলব্ধি করলাম অনেক বছর পর। যখন আমি মা হলাম তখন বুঝলাম মা হওয়া কতই না ধৈর্যের বিষয়। কোর্ট এ গিয়ে মন খারাপ থাকে কিন্তু তা ভিতরে চেপে শুধুই দায়িত্ব পালন। আমি ফোন করতাম না এই ভয়ে যদি ফোনে কান্নার শব্দ শুনি!
একবার হঠাৎ শুনলাম উমাইর ভীষণ অসুস্থ। একটু পরে শুনানি। সেটিও একজন মায়ের (গণপিটুনিতে নিহত তাসলিমা বেগম রেনু – যাকে ছেলেধরা সন্দেহে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়)। মনকে শক্ত করে আমি দায়িত্বকে প্রাধান্য দিলাম। এরপর যখন মামলার কাজ শেষ হলো ততক্ষণে উমাইরকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে যাওয়ার পর আম্মু আমার দিকে ঘৃণার চোখে তাকালো। সেই দৃষ্টি দেখে আমার হৃদয়টা যেন পুড়ে ছাই হয়ে গেল!! এদিকে উমাইর এর অবস্থা দ্রুত অবনতি ঘটল! অনেকদিন হাসপাতালে থাকার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছি। সেই কয়েকদিন মনে মনে ভাবতাম আল্লাহ নিশ্চয়ই জানেন,আমার উদ্দেশ্য কি ছিল। তিনি নিশ্চয়ই আমাকে এতবড় শাস্তি দিবেন না।
তাসলিমা বেগম রেনুর সন্তানদের জন্য দোয়া করা ছাড়া, কিছুই করার নাই!! আমরা ন্যায়বিচার দেয়ার চেষ্টা করতে পারি কিন্তু এ ক্ষতি কোন কিছু দিয়েই পূরন হবার নয়!! যারা মা হারান, মা দিবস তাদের জন্য কস্টের আর আফসোসের!! আল্লাহ সবার মায়ের হায়াত বাড়িয়ে দিন। আমিন।
_ ফেসবুক থেকে